আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে না পারায় পাকিস্তানকেই দায়ী মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে পাকিস্তানের ভূমিকায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অসন্তুষ্টির কথা আবারও জানালো হোয়াইট হাউস। গত শনিবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এখবর জানিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পদক্ষেপের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে হোয়াইট হাউসের প্রিন্সিপাল ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি রাজ শাহ বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয়গুলোর প্রতি পাকিস্তানের প্রকৃত মনোযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে পাকিস্তানের ভুমিকায় সন্তুষ্ট নন প্রেসিডেন্ট। পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কিছু দিক আমরা স্পষ্ট করতে পেরেছি। প্রথমবারের মতো আমরা পাকিস্তানকে তাদের সিদ্ধান্তের জন্য দায়ী করার কথা জানিয়েছি।’ গত বছরের আগস্টে নেওয়া পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরিকল্পনা অনুসারে তা বাস্তবায়নে পাকিস্তানের সহযোগিতা করার কথা। হোয়াইট হাউসের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে, আফগানিস্তানে ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পাকিস্তান প্রত্যাশিত সহযোগিতা করেনি। হোয়াইট হাউস কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্পের কৌশল বাস্তবায়নে আফগানিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। শাহ বলেন, আইএসের বিরুদ্ধে আমরা দৃষ্টিগ্রাহ্য সফলতা পেয়েছি। আমরা তাদের প্রভাব কমিয়ে আনতে পেরেছি এবং তাদের শত শত যোদ্ধাকে নির্মূল করতে পেরেছি। আমারা তাদের শীর্ষ নেতাকে নির্মূল করেছি এবং তাদের নতুন নেতৃত্ব ও ঘাঁটি চিহ্নিত হওয়া মাত্রই সেগুলোকে ধংস করতে নিরলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ হোয়াইট হাউসের পক্ষ থকে পাকিস্তানের বিষয়ে এমন কড়া মন্তব্য আসার আগে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘ফিন্যানশিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের’ (এফএটিএফ) জঙ্গি অর্থায়নে ব্যর্থ দেশগুলোর তালিকায় পাকিস্তানের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে। উল্লেখ্য, পর্যবেক্ষক সংস্থাটি গত শুক্রবার প্যারিসে সপ্তাহব্যাপী আলোচনা শেষ করেছিল। সেখানে তারা জঙ্গি অর্থায়নে ব্যর্থ দেশের তালিকায় পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কিছু বলেনি। স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্রের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এফএটিএফ এখনও তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি। আর তাছাড়া তাদের আলোচনার বিষয় সবার জন্য উন্মুক্তও নয়।’ এর আগে ২০১৮ সালের নববর্ষে শুভেচ্ছায় ট্রাম্প পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শঠতা ও সন্ত্রাসে মদদের অভিযোগ তোলেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের অভিযোগ আফগান তালেবান ও হাকানি নেটওয়ার্ককে আশ্রয় দিচ্ছে পাকিস্তান। সেখান থেকেই সীমান্ত পেরিয়ে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা। পরে সন্ত্রাস দমনে ব্যর্থ হওয়ায় পাকিস্তানে প্রায় সব সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে উভয় দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা শুরু হয়।
Leave a Reply